দীপেন ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎকার :

 ড. দীপেন (দেবদর্শী) ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৫৯ সালে। আদি নিবাস টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায়।


ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল, নটরডেম কলেজ ও ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলেন। মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যায় মাস্টার্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানে পিএইচডি করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসার (NASA) গডার্ড স্পেস ফ্লাইট ইনস্টিটিউটে গবেষক ছিলেন। পরে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড ক্যাম্পাসে (ইউসিআর) গামা-রশ্মি জ্যোতির্বিদ হিসেবে যোগ দেন। মহাশুন্য থেকে আসা গামা-রশ্মি পর্যবেক্ষণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে বায়ুমণ্ডলের ওপরে বেলুনবাহিত দূরবীন ওঠানোর অভিযানসমূহে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় রিভারসাইড কলেজে অধ্যাপক।

দীপেন ভট্টাচার্য বাংলাদেশের বিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ্ভাবে যুক্ত। ১৯৭৫ সাথে বন্ধুদের সহযোগিতায় 'অনুসন্ধিৎসু চক্র' নামে একটি বিজ্ঞান সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা ছাড়াও তাঁর নিওলিথ স্বপ্নঅভিজিৎ নক্ষত্রের আলো ও দিতার ঘড়ি নামে বিজ্ঞান-কল্পকাহিনিভিত্তিক ভিন্ন স্বাদের তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে।



গল্পকার-বিজ্ঞানী ড: দীপেন ভট্টাচার্য ব্যস্ত মানুষ। তাঁর সঙ্গে কুলদা রায়ের যোগাযোগ ঘটে অন্তর্জালে।  তাঁকে প্রস্তাব করতেই তিনি সা্নন্দে গল্প পাঠিয়েছেন গল্পপাঠের জন্য। প্রশ্ন লিখে পাঠালে উত্তরগুলো লিখে দিয়েছেন। এই আলাপচারিতার মধ্যে দিয়ে বৈজ্ঞানিক কল্প-গল্পের নানা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। আশা করছি লেখক-পাঠকদের ভালো লাগবে।
কুলদা রায় : . বৈজ্ঞানিক কল্প-গল্প লিখতে শুরু করলেন কেন?

দীপেন ভট্টাচার্য : প্রথম কয়েকটা গল্প একেবারেই নিজের জন্য। একটা অজানা, অস্পষ্ট রহস্যময় জগতকে ফুটিয়ে তোলার জন্য। তাই সেই গল্পগুলো কিছুটা বিমূর্ত পরাবাস্তব। বিজ্ঞান কল্পকাহিনী বলা চলে, আবার চলে না। ১৯৮০র দশকের প্রথমে আমি মস্কো ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলাম। থাকতাম ইউনিভার্সিটির সুউচ্চ ভবনে। গোলকধাঁধায় ভরা সেই ভবন আমাকে বিশেষভাবে আচ্ছন্ন করে। আমার প্রথম গল্প প্রাসাদ সেই আছন্নতা থেকেই লেখা।

 রুশ বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর দুই পুরোধা আর্কাদি ও বরিস স্ত্রুগাৎস্কি এই দুজনের "রাস্তার ধারে পিকনিক" বইটির চলচ্চিত্রায়ণ করেছিলেন আন্দ্রেই তারকভ্স্কি Stalkerনামে। এই ছবিটি ও তারকভস্কির আর একটি ছবি স্তানিস্লাভ লেমের বই অবলম্বনে Solarisআমাকে বেশ প্রভাবিত করে। আর একটি বই হল গার্সিয়া মার্কেজের শত বছরের নির্জনতা। পরবর্তীকালে মার্কিন দেশে আসার পর উরসুলা লে গিন ও হোরহে লুইস বোর্হেসের লেখা আমার ওপর বেশ ছাপ ফেলে। ইদানীং সময়ে আমি অবশ্য পুরোপুরি পরাবাস্তব বিমূর্ততা থেকে অনেকখানি সরে এসেছি, তবে গভীর বিজ্ঞান কাহিনী এক অর্থে পরাবাস্তব হতে বাধ্য কারণ তার কাজই হচ্ছে ভিন্ন একটা সম্ভাবনার সন্ধান দেওয়া, ভিন্ন একটা মহাবিশ্ব গড়ে তোলা যা কিনা আমাদের দৈনন্দিন বাস্তবতা থেকে একেবারেই আলাদা।


কুলদা রায় :  বৈজ্ঞানিক কল্প-গল্পের সঙ্গে সাধারণ গল্পকে কিভাবে আলাদা করেন?

দীপেন ভট্টাচার্য :  আমার কাছে বৈজ্ঞানিক গল্প ও সাধারণ গল্পের মধ্যে তফাৎ বলে কিছু নেই। ইতালীর ইতালো কালভিনো চমক্প্রদ সব কাহিনী লিখেছেন, তাতে ম্যাজিকাল রিয়েলিজম, বিজ্ঞান, ধাঁধা, দৈনন্দিন ঘটনা সব মিলে মিশে একাকার। ইদানীংকালে হারুকি মুরাকামি তাঁর লেখায় এক ধরণের পরাবাস্তবতার আশ্রয় নেন, যা কিনা আমাদের সাধারণ কাজকর্মকে করে তোলে রহস্যময়। এমন যেন আপনি একটি এক্স-রে চশমা দিয়ে পৃথিবীকে দেখছেন, সেই চশমা আপনার যে কোন ভঙ্গীর (বা actionএর) পেছনে একটা সুদূরপ্রসারী অব্যক্ত বোধের সন্ধান দেবে।

আমার ধারণা অতি পুরাতন সময় থেকেই বৈজ্ঞানিক ধারণা - অন্ততঃ মানুষ বিজ্ঞান বলে যা ভাবত - সেটা মিথোলজি ইত্যাদির মাধ্যমে রচনা করে গেছে। পার্থিব মিথোলজি থেকে আকাশের নক্ষত্রমণ্ডলীর নামাকরণও এক ধরণের সায়েন্স ফিকশন। অবশ্য আধুনিক বিজ্ঞান কাহিনী বলতে আমরা যা বুঝাই সেটা পরবর্তীকালে ইউরোপে রেনেসাঁ, জ্ঞানযুগের উন্মেষ, শিল্পবিপ্লবইত্যাদির সময়ে এসেছে। আমি এর মধ্যে শুধু দুটি উল্লেখযোগ্য রচনার কথা বলব। একটি হচ্ছে জোনাথান সুইফটের গালিভারের ভ্রমণ ও অন্যটি ফরাসী দার্শনিক ভল্টেয়ারের মাইক্রোমেগাস। আমি এখনও আশ্চর্য হই মাইক্রোমেগাসে ভল্টায়ার সেই ২৫০ বছর আগেই মহাবিশ্বের মাঝে মানুষের তুচ্ছ ও অকিঞ্চিত্কর উপস্থিতি সত্ত্বেওতার অন্ধ ঔদ্ধত্যের কথা কেমন স্পষ্টভাবে করে তুলে ধরেছিলেন।


কুলদা রায় : বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক গল্পের পূর্বসূরী কাদেরকে মনে করেন?

দীপেন ভট্টাচার্য :  আমি শুনেছি অষ্টাদশ শতকের শেষে জগদানন্দ রায়, হেমলাল দত্ত, জগদীশ বসু কয়েকটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লিখে গিয়েছিলেন। আমার দুর্ভাগ্য এগুলোর কোনটাই আমার পড়া হয় নি। এঁরা সবাই অষ্টাদশ শতকের বাঙ্গালী রেনেসাঁর ফসল। বঙ্কিমচন্দ্র থেকে অক্ষয়কুমার দত্ত সবাই সেই সময় জনপ্রিয় বিজ্ঞান রচনায় আগ্রহী ছিলেন। পরবর্ত্তীকালের সত্যজিৎ রায়ের শঙ্কু পড়েছি। তবে ছোটবেলায় প্রেমেন মিত্রর ঘনাদা আমার প্রিয় ছিল। ঘনাদার গল্পগুলির অনেক সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু ছোট গল্প বলে প্রেমেন্দ্র মিত্র তার রাশ টেনে দিতেন কয়েক লাইনের মধ্যে, সেই ছোট বেলায়ও আমাকে সেটা একটু হতাশ করত।


কুলদা রায় : বাংলা ভাষায় জনপ্রিয় বিজ্ঞানভিত্তিক লেখা লিখতেন আব্দুলাহ আল-মুতি সরফুদ্দিন। মুহাম্মদ ইব্রাহিমের বিজ্ঞান সাময়িকীকে ফগিরেও একদল বিজ্ঞান লেখক গড়ে উঠেছিল। তখন বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী লিখতেন মুহাম্মদ জাফর ইকবাল--স্বপন কুমার গায়েন। হুমায়ুন আহমেদও লিখেছেন।  এরপর সেভাবে বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী পাওয়া যায়নি। একধরনের রাইটার'স ব্লক দেখা দিয়েছিল? এর কারণ কি বলে মনে করেন?

দীপেন ভট্টাচার্য :  হুমায়ুন আহমেদ বা জাফর ইকবাল আমাদের দেশে বই পড়ার ব্যাপারে লোকজনকে আগ্রহী করেছেন, কল্পকাহিনী লিখে বিজ্ঞান সম্পর্কে উদ্দীপ্ত করেছেন, এখন হয়ত সময় হয়েছে আমাদের পরবর্তী ধাপে উত্তরণের, কিন্তু সেই পর্যায়ের জন্য চাই দৃঢ় শিক্ষার ভিত্তিভূমি - ভাষা ও বিজ্ঞানের, তদুপরি চাই এমন একটি সমাজ যা কিনা পরিবর্তনকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত।


কুলদা রায় : হুমায়ূন আহমেদ লিখলেন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। তার লেখা সাহিত্য হল। জনপ্রিয়ও হল। কিন্তু আমাদের জনপ্রিয় ধারার লেখকরা সে পথে গেলেন না। কেনো?

দীপেন ভট্টাচার্য : বিজ্ঞান কল্পকাহিনীকে ধারণ করতে হলে কারিগরীভাবে একটা দেশকে একটা নির্দিষ্ট অগ্রসর পর্যায়ে যেতে   হয়। সেই পর্যায়ে না গেলে সেই ভাষায় বিজ্ঞান কাহিনী হবে খুবই কৃত্রিম। লেখক যদি এই বিষয়ে সাবধান না হন তবে তাঁর রচনা হাস্যকর হতে পারে। তাছাড়া সামাজিকভাবে যদি সেই দেশ অগ্রসর না হয় তবে লেখকের পক্ষে এক্সপেরিমেন্টের কোন সুযোগ থাকে না। (এমন কি অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর দেশেও এই এক্সপেরিমেন্টটা হতে পারে।) সেটা যে শুধু বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর বেলা সত্যি তাই নয়, পরাবাস্তব ও ম্যাজিকাল রিয়েলিজমের কাহিনীর ব্যাপারেও সত্য। এছাড়া সেই দেশে যদি বাক স্বাধীনতা না থাকে এবং লেখক সামাজিক চাপেই হোক, রাজনৈতিক চাপেই হোক, কিংবা ধর্মীয় চাপেই হোক যদি এক ধরণের আত্মনিয়ন্ত্রণ বা self-censorship ব্যবহার করেন তাহলে কখনই বড় ধরণের কাজ আমরা আশা করতে পারি না। এ সব কিছুই বাংলাদেশে উন্নত বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনীর রচনাকে(কিংবা যে কোন সাহিত্যকে) বাধা দিয়েছে।


কুলদা রায় :  এ পর্যন্ত কতগুলো বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লিখেছেন? কয়টি বই বেরিয়েছে?

দীপেন ভট্টাচার্য :  আমি পেশায় একজন পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিদ। স্বাভাবিকভাবেই মহাবিশ্বের উদ্ভব, গঠন, ভবিষ্যৎ এই নিয়ে চিন্তা করি। অন্যদিকে সামাজিকভাবে আমার অভিজ্ঞতা খুব গভীর নয়। অর্থাৎ একজন যথাযথ সাহিত্যিকের সমাজ সম্পর্কে যে রকম অভিজ্ঞতা থাকা দরকার আমার মনে হয় সেটা আমার নেই। অন্যদিকে প্রকৃতি ও বিজ্ঞান সম্পর্কে আমার কিছুটা ধারণা আছে। সেই অর্থে প্রকৃতির সঙ্গে একক মানুষের সম্পর্ক বা প্রকৃতির প্রকৃতিকে বোঝার জন্য একক মানুষের যে প্রয়াস সেটা বুঝতে আমি চেষ্টা করি। উদাহরণস্বরূপ বাস্তব বা reality গঠন করতে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার যে ভূমিকা তাই নিয়ে অনেক সময় ভাবি। এই সব নিয়ে ধারণা নিয়ে আমার দু-একটা লেখা আছে।

 এপর্যন্ত আমার তিনটি বই বেরিয়েছে। এছাড়া চতুর্থ বইয়ের পাণ্ডুলিপি কোন এক প্রকাশনা সংস্থায় পড়ে আছে। প্রথম বইটির নাম ছিল নিওলিথ স্বপ্ন। এতে চারটি বিমূর্ত, অনেকটা পরাবাস্তবাদী গল্প ছিল। দ্বিতীয় বই সাহিত্য প্রকাশ থেকে বের হওয়া অভিজিৎ নক্ষত্রের আলোকে পুরোপুরিই বিজ্ঞান কল্পকাহিনী বলা চলে। তৃতীয় বই দিতার ঘড়ি প্রথমা থেকে বের হয়েছে। এতে ১৯৭১য়ের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট আছে কিছুটা। এছাড়া কয়েকটি ছোট গল্প ইন্টারনেটে বের হয়েছে। প্রকাশকরা আমার বইয়ের ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ দেখান বলে মনে হয় না। আমি বাইরে থাকি বলে হয়তো যোগাযোগটা কম। তবে বাংলাদেশের বিজ্ঞান আন্দোলনের সাথে আমি কিছুটা যুক্ত যার ফলে অনেক তরুণ আমার লেখা অনুসরণ করে, আমি তাদের কাছ কৃতজ্ঞ। বলতে গেলে তাদের উৎসাহেই আমার লেখা।

কুলদা রায় : আপনি লেখার ক্ষেত্রে কি কৌশল বা ক্রাফট গ্রহণ করেন? শুরুতে কি কোনো আইডিয়া নিয়ে আগান? না, লিখতে লিখতে আইডিয়া ডেভলপ করেন?

দীপেন ভট্টাচার্য :  অনেকে ভাবেন বিজ্ঞান কল্পকাহিনী মাত্রই মহাকাশে যাত্রা বা রোবট নিয়ে গল্প। কিন্তু বাস্তবকে গঠন করতে কিংবা বাস্তবের সমান্তরাল অন্যান্য সম্ভাব্য মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতে পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা, সমাজবিদ্যার কিছু গভীর ধারণাকে অবলম্বন করতে হয়। তাই গল্পের মূল আইডিয়ার জন্ম দিতে হলে সময় দিতে হবে। তার আইডিয়াটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মনে আসতে হবে, জোর করে নয়। এটা কোন বিজ্ঞানের আবিষ্কার থেকে, কোন বই পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে, অনেক সময় একটা স্বপ্ন থেকে সেটা আসে। কিন্তু সেই অনুপ্রেরণা বাস্বপ্ন শুধু একটা ইন্ধনমাত্র, পুরো গল্পটা শেষাবধি অন্যরকম হবে। স্বপ্নটা যদি সম্ভাবনাময় হয় তবে কয়েক সপ্তাহবা কয়েক মাস ধরে ক্রমাগতই আমি সেটা নিয়ে ভাবি তাকে কি করে একটা প্লটে ফেলা যায়। এছাড়া বিজ্ঞানের একটা মূল অনুকল্পসেই প্লটে থাকা দরকার। গল্পের শেষ অংশটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাঠককে একটা ধাঁধায় রাখা আমার উদ্দেশ্য, গল্প শেষ করেও যেন তাকে একটু ভাবতে হয় ব্যাপারটা কি হল। সেই জন্য প্রথম দফায় গল্পটা লিখে রেখে দিই, কারণ আমি জানি গল্পর শেষে আমাকে অন্ততঃ একটা বা দুটো মোড় ঘুরতে হবে যেটা পাঠক আশা করছেন না। সেই মোড়গুলো কি হতে পারে সেটা নিয়ে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ ভাবি। যদি মনে হয় সেটা মোটামুটি মানসম্পন্ন হয়েছে তবে গল্পটা শেষ করি। এরকম একটি ছোট গল্পের শেষ প্যারাটি লিখতে আমার দু-তিন বছর সময় লেগেছিল।

কুলদা রায় : বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক কল্প-গল্প লিখতে গিয়ে অনেকেই ভাষার  সমস্যায় পড়েন। জুতসই পরিভাষা খুঁজে পান না। বা বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো সহজ-সরল করে বলতে পারেন না।  ফলে পাঠকের মনোযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই ভাষা নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

দীপেন ভট্টাচার্য :  আমি ভাষা বিশেষজ্ঞ নই, 
তবে 
ভাষাটা আমার জন্য অপরিহার্য। আইডিয়াটাও। একটা ভাল আইডিয়াকে পরিবেশন করার জন্য একটা ভাল ভাষা দরকার। অনেক পরিশীলিত চিন্তার জন্য ভাল পরিভাষারও প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে বাংলা অনেক পিছিয়ে আছে। অনেকে শক্ত পরিভাষা নিয়ে অভিযোগ করেন, কিন্তু আমরা যদি ঐ সমস্ত শব্দকে ক্রমাগত ব্যবহারের মাধ্যমে পাঠকের কাছে না নিয়ে যাই তবে বাংলা ভাষা দিয়ে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রকৌশল ভিত্তিক কল্পকাহিনী বা সাধারণ রচনাকখনই সম্ভব হবে না। তবে পরিভাষা ইত্যাদি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। বিশেষজ্ঞরা এই নিয়ে ভাল বলতে পারবেন।


কুলদা রায় : আপনাকে ধন্যবাদ।

দীপেন ভট্টাচার্য :  আপনাকেও ধন্যবাদ। 

Post a Comment

0 Comments