কুলদা রায়ের কবিতা : ভাইগাছ বোনগাছ



ভাইগাছ বোনগাছ

পার্কে ভিখিরিরা সন্ধ্যার আলো খেয়ে বেঁচে থাকে,
আর সারাদিন বেঞ্চিতে পড়ে পড়ে ঘুমায়
এই নিয়ে গাছের সঙ্গে ভিখিরিদের কোন
মৌল বিবাদ নেই


পুকুরের জল থেকে হাওয়া ওঠে
শীতলতা হেতু মাছগুলো নির্ভার
পুষ্পকাল এখনো কিছু দেরী আছে
বরফ গলছে ধীরে ধীরে

 

যে মেয়েটি বসে আছে টিলার উপরে
হাটুদুটো খোলা, হালকা হাওয়ার মধ্যে
তার সামার জ্যাকেট বারবার খুলছে আরে পরছে
পরছে আর খুলছে

তাকে দেখে মনে হয়-
পাহাড়ের কাছে নগ্নতার কোনো মানেই হয় না

 

পার্কজুড়ে সারি সারি ভাইগাছ বোনগাছ
থেকে থেকে বোন বলে, সাতভাই জাগো রে
ভাই বলে, কেন বোন পারুল ডাকো রে...
গাছের ফোঁকর থেকে উকিঁ মারে কাঠবিড়ালি
হুট করে বের হয়ে রৌদ্রে নামে
ঝাউপাতার মধ্য থেকে কাঠবিড়ালিটি
সেই কালো মেয়েটির উরুর নিচে ঢুকে পড়ে
কোল বেয়ে উঠে আসে, একবার কাঁধের উপরে
দাঁড়ায়, এ সময় ভিখিরিরা পাশ ফেরে
তারপর কালো মেয়েটির খয়েরী চুল ছুয়েঁ
স্তব্ধ স্তনের ফাঁক দিয়ে লাফ মারে
উদ্গত ঘাসের ভিতরে হঠাৎ হারিয়ে যায়

 

এই কাঠবিড়ালিটির সংগে গতকাল ফিরে যাওয়া
সেই স্পর্শকাতর সাদা ছেলেটির কোন মৌল বিবাদ নেই

 

পার্কের বেঞ্চিতে হোমলেস ভিখিরিরা শুয়ে থাকে
সূর্য ডুবে গেলে-
সন্ধ্যার আলোটুকু ছুড়ে দেয় ভাইগাছ বোনগাছ
এই আলোটুকু ভিখিরিদের দিনের আহার
তারপর রাত্রি যেভাবে গভীর রাত্রির ভিতরে
অনায়াসে ঢোকে
ভিখিরিরাও এইভাবে ঢুকে পড়ে ভাইগাছে বোনগাছে
উষ্ণ ফোঁকর জুড়ে কাঠবিড়ালির


পুষ্পিত মাছের মতো শোয়

কাঠবিড়ালির সঙ্গে পার্কের ভিখিরিদের কোন
মৌল বিবাদ নেই

Post a Comment

0 Comments